নরসিংদীতে বকেয়া বেতন ভাতা আদায়ের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (০৮ মে) সকাল থেকে সদর উপজেলার শীলমান্দী এলাকায় হামিদ ফেব্রিকস লিঃ এর শ্রমিকরা বেতন ভাতা আদায়ের লক্ষ্যে মিলের সামনে কর্মসূচী পালন করে। পরে বেলা ১১ টায় কয়েক শতাধিক শ্রমিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানযটের সৃষ্টি হয়। আর ভোগান্তিতে পড়ে দূরপাল্লার যাত্রীরা।
শ্রমিকরা জানায়, হামিদ ফেব্রিকস লিঃ এর ১৪০০ শ্রমিক বেতন পাচ্ছে না। এরমধ্যে ৬ থেকে ১৪ মাসেরও বেশি সময় যাবৎ বেতন পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। গত রমজানে ঈদের আগে বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে সড়কে নামে শ্রমিকরা। এসময় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে শ্রমিকদের দাবী মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এর কোনো সুফল পায়নি শ্রমিকরা। কাউকে কোনো বেতন দেয়নি কৃর্তপক্ষ।
নজরুল নামে এক শ্রমিক বলেন, আমরা দর্ঘিদিন ধরে বেতন পাচ্ছি না। পরিবার নিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। দোকানে বাকির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, পরিশোধ করতে পারছি না। তাই বেতনের দাবিতে সড়কে নেমে এসেছি।
হামিদ ফেব্রিকস লি: এর ডেপুটি ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, গত ১৪ মাস ধরে আমি বেতন পাচ্ছি না। রমজানে আমার মেয়ে মারা গেছে তাও আমি কিছু করতে পারিনি তার জন্য। আমি এখন পর্যন্ত সাড়ে দশ লাখ টাকা পাই। আমরা চাই সকলের দেনাপাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হউক।
বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন হামিদ ফেব্রিকস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহিন। শ্রমিকদের তোপের মুখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি। পরে ঘটনাস্থলে নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, সহকারী মহা পরিদর্শক তাওহীদুল হক ভূইয়া এবং সহকারী কমিশনার মেহেদি হাসান পাটুয়ারী সহ প্রশাসনের উদ্ধর্দন কর্মকর্তারা শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনায় বসে। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ঈদুল আজহার আগে ৩টি বেতন ও একটি ঈদ বোনাস পরিশোধ করবে বলে অঙ্গীকার করেন। পরে আশ^াসের প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা ৫ টায় মহাসড়ক থেকে সড়ে যায়। এরপর ধীরে ধীরে মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
হামিদ ফেব্রিকস লি: এর সিও মীর আজহারুল ইসলাম বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যার কারণে আমাদের কারখানার উ’পাদনে সমস্যা হচ্ছে। যার কারণে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে দেরি হচ্ছে। আমাদের একটি পেমেন্ট না পাওয়ার কারণে এর আগের আশ্বাস মত বেতন পরিশোধ করতে পারিনি। আজকে প্রশাসন সহ শ্রমিকদের সাথে আলোচনা হয়েছে। আমরা ধাপে ধাপে বেতনগুলো পরিশোধ করে দিবো।
Leave a Reply