রাজধানীর গুলশান থানার মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার (২৫ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন এ রায় দেন। তবে পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, পাপিয়ার সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়িবা নূর ও জুবায়ের আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।
পাপিয়ার আইনজীবী শাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া জানান, চার বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি পাপিয়াকে তাকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে পাপিয়ার স্বামীসহ চার জনের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। এটা পাপিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার দ্বিতীয় রায়।
অসুস্থতার কারণে পাপিয়া আজ আদালতে হাজির হতে পারেননি। তারপক্ষে আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করেন। তবে আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করেন। অপর চার আসামিরর মধ্যে জুবায়ের শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। জামিনে থাকা অপর তিন আসামি আদালতে হাজির হন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রহমান জানান, আদালত পাপিয়ার জামিন বাতিল করেছেন। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেকবই, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার মাদক ও অস্ত্র মামলা, গুলশান থানায় অর্থপাচার মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলা করে।
২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অর্থপাচার মামলায় পাপিয়াসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন। ২০২২ সালের ২১ আগস্ট পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণা করলেন।
২০২০ সালের ১২ অক্টোবর পাপিয়া এবং তার স্বামী সুমনকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার ১ নম্বর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ।
বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: ফোন: +৮৮ ০১৭৩৫২৩৭১৯০,
পলাশ উপজেলা গেট, পলাশ, নরসিংদী
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত